জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিদেশে ফুল ফ্রি স্কলারশিপে পড়াশোনা

👨‍🎓🔰জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিদেশে ফুল ফ্রি স্কলারশিপে পড়াশোনা:

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে  বিদেশে উচ্চ শিক্ষা তাও আবার ফুল ফ্রি স্কলারশিপ নিয়ে! হ্যাঁ ঠিকই শুনছেন। কিভাবে? চলুন দেখে আসি।
অনেক দিন ধরেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফুল ফ্রি স্কলারশিপ নিয়ে লিখবো লিখবো করে আর লিখা হচ্ছেনা। তাই  যারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্নাস/ ডিগ্রি/ মাস্টাস/ প্রফেশনাল কোর্স করছে তাদের নিয়ে আজকে আমার এই পোস্ট।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশই মধ্যবিত্ত বা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আসে। তাদের অনেকের সামর্থ্য নেই ব্যয়বহুল প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার, তাই সবার মতো তারাও স্বপ্ন দেখে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই নিজেদের জীবনে পরিবর্তন আনার।
এই শিক্ষার্থীদের প্রায় ৮০ শতাংশই স্নাতক শেষ করে সরকারি চাকরির স্বপ্ন দেখে, কিন্তু বাস্তবতা হলো, সেই স্বপ্ন পূর্ণ হয় খুব কম মানুষেরই। সরকারি চাকরি না পেয়ে শেষ পর্যন্ত অনেকেই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিতে প্রবেশ করতে বাধ্য হয়। ফলে একদিকে বাড়ছে বেকারত্বের হার, অন্যদিকে অনেকের স্বপ্ন আর বাস্তবতার দূরত্ব রয়ে যায়।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই ভেবে বসেন, “জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি, আর কীই বা করতে পারবো! পড়া শেষ করে হয়তো কোনোমতে একটা ১৫-২০ হাজার টাকার চাকরি পেলেই হবে।” কিন্তু এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। আমার অভিজ্ঞতা বলে, যদি আপনি মনোভাব পাল্টাতে পারেন এবং নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখেন, তাহলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই বড় কিছু অর্জন সম্ভব।
বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের জন্য বিদেশে উচ্চশিক্ষার অপার সুযোগ রয়েছে। প্রায়ই ফেসবুক গ্রুপে দেখি, “জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আমার সিজিপিএ এত, আমি কি দেশের বাইরে মাস্টার্স করতে পারবো? এখানে পড়েছি বলে কি কোনো সমস্যা হবে?”
এই প্রশ্নের সহজ উত্তর হলো—হ্যাঁ, পারবেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স শেষ করেই বিশ্বের যেকোনো দেশে মাস্টার্স করার সুযোগ রয়েছে। মূল বিষয় হলো সঠিক প্রস্তুতি এবং ভালো সিজিপিএ। সিজিপিএ যত ভালো হবে, ততই সুযোগ বাড়বে।
তাই মনোভাব বদলান, নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখুন এবং উচ্চশিক্ষার লক্ষ্য নিয়ে প্রস্তুতি নিন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজেদের সীমাবদ্ধ ভেবে না দেখে, আরও বড় স্বপ্ন দেখুক—সফলতার পথ তখনই খুলে যাবে।

🌏 যে যে বিষয়গুলোর উপর আপনাকে গুরুত্ব দিতে হবেঃ

⏩️১। ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপে বিদেশে মাস্টার্স করতে চাইলে চেষ্টা করুন ৩.৫ বা তার বেশি জিপিএ ধরে রাখতে। হয়তো ভাবছেন, “৩.০ জিপিএ থাকলেও স্কলারশিপ পাওয়া যায়।” হ্যাঁ, সম্ভব, তবে সংখ্যা খুবই কম। ৩.৫+ জিপিএ থাকলে আপনার স্কলারশিপ পাওয়ার সুযোগ বহুগুণ বেড়ে যায়। তাই সেরা প্রস্তুতি নিন, সাফল্য আসবেই।
⏩️২। IELTS, বিদেশে পড়তে চাইলে IELTS স্কোর আপনার ইংরেজি দক্ষতার প্রমাণ। ইউরোপের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও ভিসার জন্য সাধারণত ৬.৫ স্কোর নিরাপদ, তবে ৬.০-তেও অনেক ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া যায়। স্কলারশিপ পেতে চাইলে স্কোর যত বেশি, তত ভালো।
এছাড়া, কিছু দেশ যেমন চীন, মালয়েশিয়া, ব্রুনাই ও রাশিয়ায় সরকারি স্কলারশিপে IELTS ছাড়াই পড়াশোনা করা যায়। এসব স্কলারশিপের তথ্য গুগলে খুঁজে নিতে পারেন।
⏩️৩। কলেজে বিভিন্ন এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিতে অংশ নেওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। প্রথমত, আপনি মূল্যবান সার্টিফিকেট পাবেন, যা ভবিষ্যতে স্কলারশিপ বা চাকরির জন্য দারুণ উপকারী হতে পারে। এই ধরনের অ্যাক্টিভিটিগুলি আপনার দক্ষতা বাড়াতে এবং নিজেকে আলাদা করে উপস্থাপন করতে সাহায্য করে।
⏩️৪। তৃতীয় বর্ষে উঠলে একটি তালিকা তৈরি করুন, যেখানে স্কলারশিপের তথ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় যোগ্যতা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নোট করে রাখুন। এতে ভবিষ্যতে আবেদন করার সময় আপনি অনেক বেশি প্রস্তুত এবং সুশৃঙ্খলভাবে এগিয়ে যেতে পারবেন।
⏩️৫। তৃতীয় বর্ষের শেষ থেকে IELTS প্রস্তুতি শুরু করুন। এভাবে আপনি সময়মতো ভালো প্রস্তুতি নিতে পারবেন এবং পরীক্ষা দিতে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবেন।
⏩️৬। চতুর্থ বর্ষের শুরু থেকেই ভালো মানের সিভি, রিসার্চ প্রপোজাল এবং মোটিভেশনাল লেটার লেখার অভ্যাস তৈরি করুন। এগুলো লিখে গুগল ড্রাইভে সেভ করে রাখলে, প্রয়োজনের সময় সহজেই এডিট ও ব্যবহার করতে পারবেন।
⏩️৭। প্রফেসরের কাছে আগে থেকেই জানিয়ে দিন যে, আপনি তার থেকে রিকমেন্ডেশন লেটার নিতে চান। অর্নাস শেষ হওয়ার আগেই এটি সংগ্রহ করে রাখলে, ভবিষ্যতে আবেদন প্রক্রিয়া অনেক বেশি সহজ ও সুশৃঙ্খল হবে।
⏩️৮। এই চার বছরে ছোট ছোট প্রজেক্ট করুন, যা পরবর্তীতে সিভিতে সুন্দরভাবে যোগ করতে পারবেন। এসব প্রজেক্ট আপনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা প্রদর্শনে সাহায্য করবে এবং আবেদন প্রক্রিয়ায় আপনাকে এগিয়ে রাখবে।
⏩️৯। পাবলিকেশন, স্কলারশিপ পাবার ক্ষেএে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে রিসার্চ এর সুযোগ নেই বললেই চলে।  জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে রিসার্চ সুবিধা না থাকলেও National University Research Hub And Scholarship Abroad – দিচ্ছে  জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি  কমপ্লিট রিসার্চ কোর্স।
যার মাধ্যমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও এখন রিসার্চ করতে পারবে। সপ্ন যদি হয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফুল ফ্রি স্কলারশিপ নিয়ে উচ্চশিক্ষার সেক্ষেত্রে রিসার্চ করা অপরিহার্য। রিসার্চ স্কলারশিপ পাবার হার অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। আপনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আপনাকে দিয়ে রিসার্চ হবেনা, আপনি পাবলিকেশন পাবেন না- এই ধরনের চিন্তা আজই বাদ দিয়ে দিন। দ্রুত আমাদের রিসার্চ কোর্স এনরোল করুন, কোর্সটি সম্পূর্ণ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে মাত্র ৯৯০ টাকায় সাজানো হয়েছে। আমাদের এই কোর্সটি সম্পন্ন করার মাধ্যমে স্কলারশিপ পাবার সম্ভাবনা আরো বাড়িয়ে তুলুন। ।
★অর্নাস শেষ হওয়ার পর আবেদন প্রস্তুতি শুরু করুন। তৈরি করা লিস্ট দেখে অনলাইন রিসার্চ করুন বা গ্রুপের সাহায্য নিয়ে আবেদন করুন। স্কলারশিপ পেতে ভাগ্যও কাজ করে, তবে টাকা থাকলে অনেক ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স করা সম্ভব। এমন উদাহরণ অনেকেই আছেন।
লিস্ট বানানোর সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের রিকোয়ারমেন্ট ভালোভাবে চেক করে নিন। কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে না পারলেও সমস্যা নেই, দুই-একটি জায়গায় আবেদন করলেই হবে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন বলে নিজেকে ছোট ভাববেন না—এখান থেকে বিদেশে ফুল ফ্রি স্কলারশিপের অনেক সুযোগ আছে। পরিশ্রম করলে ভালো কিছু অর্জন করতে পারবেন, হয়তো দেশে বা বিদেশে উচ্চপদে চাকরি পাবেন। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত আপনাকেই নিতে হবে—দশ- বিশ হাজার টাকার চাকরি নেবেন, নাকি বিদেশে উচ্চতর শিক্ষা লাভ করবেন, তাও ফুল ফ্রি!- এটা আপনার সিদ্ধান্ত। অনেকেই ১৫-২০ লাখ টাকা খরচ করে সরকারি চাকরি নেন, কিন্তু বেতন হয়তো ১৫-৩০ হাজার টাকা। কিন্তু ভাবুন, এই টাকা দিয়ে যদি দেশের বাইরে ভালো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা নিতে পারেন, তাহলে আপনার ভবিষ্যৎ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে?
Post Credit-
Content Team,
National University Research Hub & Scholarship Abroad

Leave a Comment