বিদেশে উচ্চশিক্ষা: কোথায়, কখন ও কিভাবে ভর্তি হবেন?

বিদেশে উচ্চশিক্ষা: কোথায়, কখন ও কিভাবে ভর্তি হবেন?

বিদেশে উচ্চশিক্ষা অনেকের কাছে সোনার হরিণ। আবার কারো কাছে পান্তা ভাত। এ কথা এ জন্যই বলছি যে, কেউ আছে কখনই বিদেশে পড়তে যাওয়ার জন্য কাঙ্খিত স্টুডেন্ট ভিসা পাবে না। আবার অনেকেই আছে যারা একটু চেষ্টা করলেই বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও ভিসা পাবে। এমনকি স্কলারশিপও পেয়ে যাবে। নিশ্চই আপনার মনে প্রশ্ন জাগছে, কারা সেই সৌভাগ্যের অধিকারী। আবার হত ভাগাটাই বা কে? কেন বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য যাবেন। কিভাবে যাবেন এবং কোন দেশে পড়তে গেলে আপনার জন্য ভালো হবে। মনোযোগ দিয়ে নিচের লেখাটি পড়ুন। জবাব পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ্।

কেন বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করবেন?

যদি খরচের কথা চিন্তা করেন তাহলে দেশের সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে ভালো অপশন নেই। আর যদি লেখা পড়ার মান, কর্ম সংস্থান ও নিরাপদ জীবন যাপনের উপর গুরুত্ব দেন, তবে বিদেশী বিশ্ববিদ্যলয়ে ভর্তি হওয়াই উত্তম। বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় গুলো সাধারণত ছাত্র রাজনীতি মুক্ত থাকা ও খাওয়ার মান অনেক ভলো। ওয়ার্ল্ড র‌্যাংকিং এর প্রথম ১০০০ তম বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর বেশির ভাগই আমেরিকা, ইংল্যান্ড, কানাডা, জার্মানী, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, আয়ারল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, বেলজিয়াম, মালয়েশিয়া, চায়না, ইন্ডিয়াসহ উন্নত দেশ গুলোতে অবস্থিত। তাই যদি আপনার আর্থিক স্বচ্ছলতা থাকে তাহলে জীবনের সবচেয়ে বেটার বিনিয়োগটা বিদেশে পড়া লেখার জন্যই করুন। আর যদি স্কলারশিপ পেয়ে যান, তাহলে তো সোনায় সোহাগা।

কিভাবে বিদেশে পড়তে যাবেন?

ধরেন আপনি কানাডার একটি বিশ্ববিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যেতে চান। তাহলে আপনার প্রথম কাজ হল সে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা। প্রস্ততি বলতে আমি বলছি না যে শুধু ভাল ফল অর্জন করলেই চলবে। বরং যে দেশে উচ্চশিক্ষার জন্য যেতে চান সে দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে ভালো ধরণা নিতে হবে। সংশ্লিষ্ঠ দেশের বা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশের সাথে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার যোগ্যতাটাও তৈরি করতে হবে। সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে ভর্তির প্রাথমিক অনুমতি জানিয়ে যে চিঠি দিবে তাই অফার লেটার। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রদত্ত অফার লেটার প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে বার বার পড়তে হবে। ভালভাবে জেনে নিন টিউশন ফির পরিমাণসহ অন্যান্য বিষয়।

স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য করণীয়:

স্কলারশিপের জন্য Youth Opportunities, youth carnival, খোলা বাক্স, এর মত ওয়েবসাইট ও বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর নিজস্ব ওয়েব সাইট ভিজিট করতে হবে। সর্বপরি কথা হল, ভালো রেজাল্ট, ভাষা দক্ষতা, সময়মত পরিকল্পনা গহন ও নিরলস প্রচেষ্টাই বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও স্কলারশিপের পূর্বশর্ত।

ভাষা দক্ষতা:

এ পর আপনার যা লাগবে সেটি হল ভাষার দক্ষতা। আমেরিকা, কানাডা, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া প্রভৃতি দেশের প্রধান ভাষা যেহেতু ইংরেজি তাই ইংরেজিতে দক্ষ হতে হবে। যেহেতু পৃথিবীর প্রায় সকল দেশই নিজদেশের ভাষা অথবা আন্তর্জাতিক ভাষা ইংরেজি ভাষায় পড়াশোনা করতে হয়। সুতরাং বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য প্রয়োজন ভাষাগত দক্ষতা। আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে প্রায় পৃথিবীর সব দেশেই ইংরেজী মাধ্যমে পড়াশোনা করা যায়। তাই বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের ইংরেজী বিষয়ে দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। এমকি দেশেও প্রায় সকল সাবজেক্টে ইংরেজিতে পড়তে এবং লিখতে হয়। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন মাত্রায় স্কোর চাওয়া হয়। তবে বেশিরভাগই আইইএলটিএস (IELTS) স্কোর ৫.৫ থেকে ৬.৫। এবং টোফেল (TOEFL) স্কোর ৬০ থেকে ১০০ পর্যন্ত চায়। এছাড়াও কোন কোন ক্ষেত্রে জিআরই (GRE) অর্থাৎ- Graduate Record Examination, জিম্যাট (GMAT) অর্থাৎ- Grauate Management Admission Test, নিউস্যাট (NEWSAT) ইত্যাদি পরীক্ষার প্রয়োজন হয়ে থাকে।

পড়ালেখার খরচ:

বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হবে, শুরুতেই নিশ্চিত হোন আপনার পরিবার সে খরচের যোগান দিতে পারবে কি না। এছাড়া যদি অন্য কেউ আপনার ব্যয়ভার বহন করে তাহলে তার সঙ্গে আপনার রক্তের সম্পর্ক কি না তা নিশ্চিত হোন । কারণ, ভিসা অফিসের অফিসার চান শিক্ষার ব্যয়ভার বহনকারীর সঙ্গে যেন শিক্ষার্থীর রক্তের সম্পর্ক থাকে। এবং আর্থিক সচ্ছলতার প্রমাণস্বরূপ প্রতিটি দূতাবাসেই ব্যাংক সলভেন্সি সার্টিফিকেট জমা দিতে হয়। যা সংশ্লিষ্ঠ ব্যাংক থেকে গ্রহণ করতে হয়। দূতাবাসের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে মেডিকেল সার্টিফিকেট প্রদানও করতে হয়।

কোন দেশে পড়তে যাওয়া ভালো?

আপনি বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পাবেন কিনা এর উপর ভিত্তি করে দেশ নির্বাচ করা উচিৎ। কারণ বিদেশে পড়ালেখার সাথে ব্যায়ের সম্পর্ক রয়েছে। যদি স্কলারশিপ পেয়ে যান, তাহলে বিশ্বের এক নম্বর দেশের ওয়ার্ল্ড র‌্যাংকিং এ এক নম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যেতে অসুবিধা নাই। কিন্তু যদি স্কলারশিপ না পান। অথবা আংশিক স্কলারশিপ পান সেক্ষেত্রে আপনার সামর্থ অনুযায়ি দেশ নির্বাচন করা উচিৎ। কারণ, আমেরিকায় সাধারণত গ্রাজুয়েট লেভে পড়তে বছরে বিশ লাখ টাকা লাগে। কানাডায় বছরে পনের লাখ টাকা লাগে। অস্ট্রেলিয়া ও ইউকেতে পনের থেকে আঠারো লাখ টাকা লাগে। মালয়েশিয়া, চায়না ও ইন্ডিয়ায় মোটামুটি বাংলাদেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মতই পড়া লেখার খরচ।

সঠিক কোর্স নির্বাচন জরুরী:

গ্রাজুয়েট, পোস্ট গ্রাজুয়েট ও পিএইচ.ডি ডিগ্রীসহ উচ্চতর সকল প্রোগ্রামেই কোর্স নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান গ্লোবালাইজেশনের যুগে উচ্চশিক্ষার অনেক কোর্সের মধ্যে আপনাকে এমন একটী কোর্স বেছে নিতে হবে যা আপনার ভবিষ্যৎ পেশাগত দক্ষতার পূর্ব প্রস্তুতি হিসাবে গণ্য হবে। তাছাড়া বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য আপনি একেবারে একটি নতুন বিষয়ও বেছে নিতে পারেন। আমাদের দেশে প্রচলিত নয় কিন্তু বিশ্ব প্রেক্ষাপটে গুরত্বপূর্ন এবং চাহিদা সম্পন্ন এরকম কোন বিষয়কেও আপনি পছন্দ করতে পারেন। তবে সাধারন বিদেশের পাশাপাশি আমাদের দেশও যথেষ্ট চাহিদা আছে এরকম কোন কোর্সকে উচ্চশিক্ষার নির্বাচন করাই শ্রেয়।
আরো পড়ুন- বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির জন্য সকল সাবজেক্ট এর তালিকা…

স্টুডেন্ট ভিসা প্রসেসিং করার নিয়ম:

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার পর তাদের পাঠানো অফার লেটার বা ভর্তির অনুমতিপত্রে উল্লেখিত ডেডলাইনের মধ্যেই প্রতিষ্ঠানে পৌছাতে হবে। অন্যথায় ভর্তি বাতিল হবে। তাই নির্দিষ্ট তারিখের পূর্বে আপনাকে সেদেশের ভিসা সংগ্রহ করতে হবে। ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য থাকলেও প্রায় সব নিয়মই এক রকম। কোন দেশে ভিসা পেতে হলে প্রথমে সে দেশের ভিসার আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই ভিসার আবেদনপত্র সরবরাহ করে থাকে। তা না হলে নির্দিষ্ট দূতাবাস থেকে ভিসার আবেদনপত্র সংগ্রহ করে সঠিক তথ্য দিয়ে নির্ভুল ভাবে প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্রসহ দূতাবাসে জমা দিতে হবে এবং নির্দিষ্ট দিনে ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে ভিসা সংগ্রহ করতে হবে। ভিসার জন্য সাধারনত যে সব কাগজপত্র লাগে-
শিক্ষাগত কাগজপত্রঃ সনদপত্র, নম্বরপত্র, প্রতিষ্ঠান প্রধানের প্রশংসাপত্রের সত্যায়িত ফটোকপিসহ মূলকপি।

পাসপোর্টঃ

পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ১ বছর থাকতে হবে এবং পেশা, জন্ম তারিখ ও অন্যান্য সকল তথ্যের সাথে শিক্ষাগত কাগজ পত্রের মিল থাকতে হবে। আপনার পাসপোর্ট করা না থাকলে পাসপোর্ট করে নিন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির প্রমানপত্র বা অফার লেটার।
আর্থিক সামর্থ্যের প্রমানপত্রঃ আবেদন ও ভর্তি প্রসেসিং অংশে এ সম্পর্কে বিস্তারিত দেখে নিন।

ছবিঃ

সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে, পরিস্কার ভদ্র পোশাকে তোলা স্মার্ট ও স্পষ্ট ছবি হলে ভাল হয় এবং রঙ্গিন হওয়াই উত্তম।
টিউশন ফি’র ব্যাংক ড্রাফটঃ প্রতিষ্ঠান ভেদে টিউশন ফি ভিন্ন হয়ে থাকে।
ভাষাগত দক্ষতার প্রমানপত্রঃ আবেদন ও ভর্তি প্রসেসিং অংশে দেখুন।

পুলিশ ছাড়পত্রঃ

পুলিশ ছাড়পত্রের জন্য নিজ নিজ থানায় যোগাযোগ করে একটি নির্দিষ্ট ফি প্রদানের মাধ্যমে এটি সংগ্রহ করা যায়। তবে আপনার বিরুদ্ধে দেশ ও আইনবিরোধী কন কাজে জরিত থাকের অভিযোগ থাকলে আপনি পুলিশ ছাড়পত্র পাবেন না।

বিনা বেতনে পড়ালেখা:

বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইউনিভার্সিটিগুলোতে নাম মাত্র ব্যয়ে অথবা বিনা বেতনে অধ্যয়নের সুযোগ রয়েছে জার্মানীতে। জার্মান সরকার তাদের বাজেটের একটি বিরাট অংশ ব্যয় করে শিক্ষা ক্ষাতে। তাই এখানে স্কলারশিপসহ অনেক ভালো মানের শিক্ষা লাভ করা যায়। আপনি যদি স্কলারশিপ নাও পান, তবে গ্রাজুয়েট কোর্সের জন্য প্রতি বছর মাত্র ৩৫০০ ডলার খরচ হবে।
উত্তর পূর্ব ইউরোপের স্ক্যান্ডেনেভিয়ান পাঁচটি দেশ (ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, নরওয়ে, সুইডেন) এ দেশ গুলোতেও খুব সুবিধা নিয়ে পড়ালেখা করা যায়। যেমন, নরওয়েতে বিশ্বমানের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর, মাস্টার্স ও পিএইচডি স্তরে উচ্চশিক্ষা একদম ফ্রি, সেক্ষেত্রে নরওয়েজিয়ান ভাষায় দক্ষতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। ডেনমার্ক ও ফিনল্যান্ডেও বিভিন্ন স্কলারশিপের ব্যবস্থা রয়েছে । এ সব বৃত্তির মাধ্যমে বিনামূল্যে পড়ালেখা ছাড়াও থাকা-খাওয়ার জন্য বৃত্তি পাওয়া যায়। তবে এসব সুবিধা সাধারণত স্নাতকোত্তর কিংবা পিএইচডি ডিগ্রীর জন্য দেওয়া হয়।

বিদেশে পার্টটাইম কাজের সুযোগ:

বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে শিক্ষার্থীদের জন্য পার্টটাইম কাজের সুবিধা আছে। এ সুবিধাটি আমাদের মতো গরিব দেশের জন্য খুবই প্রয়োজন। সেসব দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা (ঘণ্টাভিত্তিক পারিশ্রমিক সুবিধায়) কাজ করার সুবিধা আছে। এ সুবিধা শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার খরচের একটা বড় অংশের যোগান দেয়। সে দেশে যাওয়ার পরই এসব সুবিধা গ্রহণের পথ খুঁজে পাবেন।

কানাডায় উচ্চশিক্ষা ও স্কলারশিপ

কানাডায় পড়াশোনা চলাকালীন পার্ট টাইম জব করার অফুরন্ত সুযোগ রয়েছে। কানাডার আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যা অনেক কম তাদের প্রচুর মানব সম্পদ দরকার এজন্য লেখাপড়া শেষ করে পার্মানেন্ট হওয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাপক সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়।

ইতালিতে পড়ালেখা

ইতালিতে একাডেমিক সাফল্যের সাথে বিভিন্ন যোগ্যতাকেও প্রাধান্য দিয়ে ছাত্রবৃত্তি, লোন, বেতন হ্রাসের ব্যবস্থা করে তারা। থাকা-খাওয়ার জন্য খরচ ইউরোপীয় দেশের তুলনায় বেশি। এখানে বছরে ১৪ হাজার ডলারের মত লাগে। রাজধানী রোম, বিখ্যাত শহর মিলান ছাড়াও আরো বেশ কিছু শহরে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়সূহ বাংলাদেশ ও ভারতের শিক্ষার্থীদের জন্য পছন্দের জায়গা।

মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষা:

অবশ্যই মালয়েশিয়া স্বল্প খরচে থাকা ও পড়াশোনার জন্য অন্যতম একটি দেশ। মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর বেস্ট স্টুডেন্ট সিটিজ ক্যাটাগরিতে ২০১৬ সবচেয়ে সাশ্রয়ী শহরের মর্যাদা লাভ করেছে। মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষার মান খুবই উন্নত। মালয়েশিয়া থেকে লেখাপড়া করে পৃথিবীর যেকোন দেশে চাকুরী অথবা পরবর্তী পর্যায়ের লেখাপড়ার জন্য যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। মালয়েশিয়ায় কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, এমবিবিএস, বিবিএ, এম.বিএ. পিএইচ.ডিসহ প্রায় সকল বিভাগে পড়ালেখার সুযোগ রয়েছে। মালয়েশিয়ার সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, University of Malaya (UM), University of Technology, Malaysia, (UTM), International Islamic University Malaysia,University Putra Malaysia (UPM), ইত্যাদি। আর বেসরকারীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, Limkokwing University (লিমককউইং ইউনিভার্সিটি), UCSI (ইউসিএসআই) INTI (ইনটি), Taylor’s University (টেইলর ইউনিভার্সিটি), MAHSA University (মাশা বিশ্ববিদ্যালয়), SEGI (সেগি), MULTIMEDIA University (মাল্টিমিডিয়া), NILAI University (নীলাই) ইত্যাদি।

অস্ট্রিয়ায় পড়ালেখা:

আইনস্টাইন যে শহরে পড়ালেখা করেছেন অস্ট্রিয়ার রাজধানী সেই ভিয়েনা বিশ্বের অন্যতম শিক্ষার্থীবান্ধব শহর বলে বিবেচিত। এ দেশটিতে পড়াশোনা করা যায় অপেক্ষাকৃত কম খরচে। ইউরোপীয়দের জন্য যেখানে সেমিস্টার ফি ৪৫০ ডলার, সেক্ষেত্রে অন্যদের জন্য ৭০০ ডলারের মতো, যা উন্নত অনেক দেশের তুলনায় কম।

ভারতে উচ্চশিক্ষা:

ভারতীয় সরকার থেকে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ বৃত্তির ব্যবস্থা করেছে। এছাড়া বেসরকারী বিশশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তির ব্যবস্থা কম থাকলেও ভাল ফলাফল সাপেক্ষে আংশিক স্কলারশিপের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচ ইউরোপ কিংবা আমেরিকার তুলনায় অনেক কম। তাছাড়া থাকা খাওয়ার খরচও অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক সস্তা।

তাইওয়ান পড়ালেখা:

এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র তাইওয়ানও শিক্ষার দিক দিয়ে বেশ অগ্রসর। দেশটিতে লিবারেল আর্টসের যে কোনো বিষয়ে পোস্টগ্র্যাজুয়েট করতে প্রায় ৩ হাজার ইউএস ডলার লাগে। তা ছাড়া জীবনযাত্রার খরচও তুলনামূলক অনেক কম। প্রতিবছর আবাসনের পেছনে গড়ে ২ হাজার ৩৩০ ইউএস ডলার ব্যয় হয় এই দেশটিতে। বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় উপরের দিকে রয়েছে দেশটির বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থী বান্ধব শহরের মধ্যে শীর্ষ ২০ এর একটি তাইওয়ানের রাজধানী তাইপে। এছাড়া তো আছেই সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের নামমাত্র খরচে পড়ালেখার সুযোগ ও স্কলারশিপ।

গ্রিসে পড়ালেখা:

গ্রিসে সরকারী ইউনিভার্সিটিতে বিনা টিউশন ফিতে বা অল্প খরচে উচ্চশিক্ষার সুযোগ রয়েছে। তবে সেটা ব্যাচেলর লেভেলে, মাস্টার্সে নয় । কিন্তু ব্যাচেলর প্রোগ্রামের বেশিরভাগই গ্রীক ভাষায় অধ্যায়ন করতে হয়। তবে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যাচেলর ও মাস্টার্স পর্যায়ে ইংরজিতেও উচ্চশিক্ষার সুযোগ রয়েছে।

পোল্যান্ড পড়ালেখা:

আপনি যদি পোলিশ ভাষায় পারদর্শী হন এবং পোলিশ ভাষায় আপনার কোর্স এনরোল করেন, তাহলে অন্য সকল পোলিশ শিক্ষার্থীর মতো আপনিও বিনামূল্যে অধ্যায়ন করতে পারবেন। ইংরেজিতেও আপনার ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ আছে এই দেশটিতে। তবে, সেক্ষেত্রে আপনার প্রতি বছরে প্রায় ২ হাজার ১৮৫ থেকে ৩ হাজার ২৮০ ইউএস ডলার ব্যয় হবে।
চেক লিস্ট:
নিচের বিষয় গুলো সম্পন্ন করেছেন কিনা, মিলিয়ে নিন। আর তা না হলে বিপদেও পড়তে পারেন। সুতরাং মনোযোগ সহকারে নিচের অংশটি পড়ুন।
ইংরেজীতে দক্ষতা অর্জন করা। তবে চীন, জাপান, জার্মানী, ফ্রান্স এসব দেশে যেতে চাইলে ঐ দেশের ভাষাটা শিখে নেয়া ভালো। প্রয়োজনে GRE, SAT, GMAT বা TOFEL প্রস্তুতি গ্রহণ করা।
সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট ইংরেজীতে করিয়ে নিতে হবে।
পাসপোর্টে যাতে কোন সমস্যা না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট হওয়া দরকার।
যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চান তার খরচ জোগার করা। যদি কর্তৃপক্ষ মনে করে ব্যয়ভার বহন করা শিক্ষার্থীর পক্ষে সম্ভব নয়, তাহলে ভিসা মিলবে না।
কোন এডুকেশন কনসালটেন্সি ফার্মের মাধ্যমে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে চাইলে আগে তাদের সম্পর্কে খোঁজ খবর নেয়া।

Leave a Comment